26 Nov 2024, 03:36 am

ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে সহযোগিতার অভিযোগ ; ইরানের অস্বীকার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো বারবার তেহরানকে এই যুদ্ধে ইন্ধন যোগানোর অভিযোগ তুলে, কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইরান রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রি করছে দাবি করে আসছে। যদিও তেহরান প্রতিবারই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ দাবি করেছে যে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানি ড্রোন ব্যবহার করেছে।কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইরানের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ উত্থাপনের উদ্দেশ্য হচ্ছে,  ইরান ও রাশিয়ার ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র পাঠানোর বিষয়টিকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করা।

পার্সটুডে-এর মতে, তেহরানের বিরুদ্ধে কিয়েভ এবং তার সমর্থকদের অভিযোগ এমন সময় উত্থাপিত হয়েছে যখন ইরান বারবার বলেছে যে তারা ইউক্রেন সংকটের বিষয়ে নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলে।

প্রকৃতপক্ষে, ইরান এই সঙ্কটের কোনো পক্ষ নয় এবং এই সঙ্কটের শুরু থেকেই, তারা দুই দেশকে কূটনৈতিক উপায়ে বিরাজমান বিরোধ ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছে। কেননা উভয় পক্ষের সাথে ইরানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।

ইরানের বিরুদ্ধে উত্থপিত অভিযোগের ব্যাপারে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সাথে তেহরানের কর্মকর্তাদের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সে বৈঠকে  ইউক্রেনের কর্মকর্তারা রাশিয়ার ইরানী ড্রোন ব্যবহারের অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। আর এ থেকেই ইরানের বিরুদ্ধে তাদের দাবির অসারতা প্রমাণিত হয়েছে।

এর আগে, ইরানের শহীদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেছিলেন, রাশিয়ার কাছে যে কয়েকটি ইরানি ড্রোন রয়েছে সেগুলো ইউক্রেন যুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত নয় বরং এই যুদ্ধ শুরুর অনেক আগে তেহরান-রাশিয়া অস্ত্র চুক্তির সাথে সম্পর্কিত বিষয় ছিল।

এ ছাড়া, ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তারা কখনোই ইউক্রেন যুদ্ধকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেনি এবং জনগণের স্বার্থে বারবার এর অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই,ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে বলেছিলেন:

আমরা মানুষ হত্যা এবং যেকোনো দেশ বা জাতির অবকাঠামো ধ্বংসের বিরুদ্ধে। বিশ্বের  যে কোনো স্থানে এ ধরণের পদক্ষেপের আমরা বিরোধী। এটা আমাদের অলঙ্ঘনীয় নীতি। আমরা পশ্চিমাদের মতো নই… আমরা ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে, আমরা চাই যুদ্ধ এখনই শেষ হোক। তবে যে কোনো সংকটের নিরাময় তখনই সম্ভব যদি সংকটের মূল জানা যায়। ইউক্রেনের সংকটের মূলে রয়েছে আমেরিকাসহ পশ্চিমাদের নীতি।

সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি গত বছর, ইউক্রেনের যুদ্ধে ইরানের অংশগ্রহণের মিথ্যা দাবি প্রত্যাখ্যান করে আরো বলেছিলেন, আমরা স্পষ্টভাবে এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে ইউক্রেনের যুদ্ধে অংশগ্রহণ প্রত্যাখ্যান করি এবং এই জাতীয় অভিযোগ একেবারেই সত্য নয়। ন্যাটোকে পূর্ব অভিমুখে সম্প্রসারিত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করেছিল। কিন্তু এখন ইউক্রেনের জনগণ যখন যুদ্ধে আটকা পড়ে সমস্যায় ভুগছে তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র কারখানাগুলো ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে এবং এর কারণেই তারা চায় না যুদ্ধ এখনই শেষ হোক।

এক পরিসংখ্যান অনুসারে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ এবং গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলার পর থেকে মার্কিন অস্ত্র কোম্পানিগুলোর  পাশাপাশি সাতটি প্রধান ইউরোপীয় অস্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানি ব্যাপক মুনাফা করেছে।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 13451
  • Total Visits: 1312994
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২৩শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৩:৩৬

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018